আমাদের সমাজ বিশ্বাসী সমাজ। তাই যা দেখে, তাই বিশ্বাস করে। যেহেতু বিজ্ঞানের চর্চা কম, যুক্তির চর্চা নেই, ফলে ইন্টারনেটে কোন কিছু দেখে বিশ্বাস করে, নির্ভর করে। কিন্তু একবারও ভাবেনা ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্য অনেক সময়ই ভুল হতে পারে বা নিজের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কোন একটা মেকআপ ভিডিও দেখলো, সাথে সাথে নিজের তকে অ্যাপ্লাই করা শুরু করলো। ডাক্তারি পরামর্শ দেখলো, এরপর সেই পরামর্শ অনুযায়ী চলতে লাগলো। ডায়েট চার্ট দেখলো, খুশি মনে ডায়েট করা শুরু করলো।
প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা শরীর। সবার শরীরের জন্য একই পরামর্শ কার্যকরী না। ঔষধ, ডায়েট কন্ট্রোল, মেকআপ ইত্যাদির জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞর পরামর্শ জরুরী। সারাদিন পড়াশোনা করা ডাক্তারকে গালি দিচ্ছেন, আর সেই আপনারা গুগলে দুটো জিনিস পড়ে নিজেরা ডাক্তার হয়ে উঠছেন, হয়ে উঠছেন বিশেষজ্ঞ।
ডাক্তার ভালও আছে খারাপও আছে। তবুও দিন শেষে আমাদের ডাক্তারের উপরেই ভরসা করতে হবে, গুগলের উপর না। আজকাল কিছু ফেসবুক সেলিব্রিটি ডাক্তার বের হয়েছে। দু একটি হয়তবা আছে ভাল, যারা চিন্তা ভাবনা করে পরামর্শ দেন। কিন্তু বেশিরভাগই নিজে কিছু জানেনা, সারাদিন ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করতে থাকে। একটা কমনসেন্সের বিষয়, যারাই ফেসবুকে সেলিব্রিটি তকমার পেছনে ঘুরবে, লাইক কমেন্টের পেছনে ঘুরবে, তখনই বুঝবেন তাদের পরামর্শে সমস্যা আছে। আর একজন ভাল ডাক্তার এত ঘন ঘন লাইভ করা, ফেসবুকে ভিডিও করার সময় কোথায় পাবে?
এখন করোনাকে অনেকেই হাল্কা ভাবে নেয়া শুরু করেছেন। কেউ কেউ টেস্ট করতে চাচ্ছেন না, ডাক্তারের কাছে যেতে চাচ্ছেন না। কারণও আছে, কেননা ভুয়া টেস্ট হচ্ছে। তারপরেও ভাল টেস্টও তো হচ্ছে। করোনা কিন্তু ইদানিং হুট করে নিয়ে যাচ্ছে। সময় দিচ্ছেনা। অবহেলা করবেন না। ফেসবুক দেখে ঔষধ গ্রহণ করবেন না, ডায়েট করবেন না।
সম্প্রতি কাছের একজন মানুষ হারিয়েছি। তাই অনুরোধ ইন্টারনেট দেখে নিজের শরীর নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না। সরাসরি ডাক্তারের সাথে কথা বলবেন, ডাক্তারের কথা অনুযায়ী চলবেন।
© Collected