গতকাল No Violence Against Women দিবস ছিলো.
কয়েকদিন আগে পাপুয়া নিউগিনির, ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত সুযোগ পাওয়া উপলক্ষে দেশটি সম্পর্কে জানার জন্য একটু ইউটিউবে গেলাম। একটি ডকুমেন্টরিতে সেই দেশে নারীর উপর নির্যাতনের ভয়ংকর সব কাহিনী জানলাম। অধিকাংশ নারীকেই গৃহ নির্যাতনের শিকার হতে হয়। নির্যাতনগুলোও সব ভয়ংকর। আবার অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের সাথে যৌন সঙ্গম করা যে নির্যাতন, সেটি যে ধর্ষণের মধ্য পড়ে, সেটিই তারা বিশ্বাস করতে চাইনা। ঘরে এসে বউ পেটানো তাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।
অবশ্য এই দেশটিও উন্নত দেশ না, এখনও ক্রাইম রেট বেশি, তাই সেখানে এই বিষয়গুলো ঘটা স্বাভাবিক।
কিন্তু অনেক উন্নত-উন্নয়নশীল দেশ যেখানে শিক্ষার আলো বা অন্যান্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকা স্বত্বেও এখনও নারী নির্যাতনের হারের চিত্র বেশ ভয়ংকরই।
একটি কথায় প্রচলিত রয়েছে, বিড়াল মারো বাসর রাতে। বিশ্বের কিছু সংস্কৃতিতে বাসর রাতে স্বামীকে হিংস্র কিছু একটা করতে হয়, যেন সেই রাতে বউ বুঝতে পারে, তারা স্বামী রাগী, ক্ষমতাবান। আর এই চিত্রটিই তৈরি করা হয় যে, পুরুষকে হতে হবে রাগী, ক্ষমতাবান, বউকে ধমকের উপর রাখতে হবে।
সেই কারণে অনেক সমাজে নারী-পুরুষ সকলেই মনে করে, নারী হলে সংসারে একটু আধটু পুরুষের হাতে মার খেতেই হবে। এটি সংসারের অংশ, এটিই ফ্যাশন।
এটি খুবই দুখের কথা যে, আমরা শুধুমাত্র নারী হওয়ার জন্য নির্যাতন করি। পুরুষ হওয়ার জন্য পুরুষ নির্যাতিত হয়না, কিন্তু নারী হওয়ার জন্য নারী নির্যাতিত হয়।
নারীর উপর কোন অবস্থাতেই হিংস্রতা গ্রহণযোগ্য না। হিংস্রতা দেখলে আপনাকে এগিয়ে আসতে হবে। এগিয়ে না এসে চুপ করে থাকা মানে সেই হিংস্রতাতে আপনারও অংশগ্রহণ আছে।
যে মানুষটি আজ থাপ্পড় দিল, তাকে প্রশ্রয় দিলে সে দুইদিন পরে আপনাকে হত্যাও করতে পারে। আর এমন হত্যার ঘটনা নিয়মিত পত্রিকায় দেখি। অনেকে পুরুষ নির্যাতিত হয় বলে নারী নির্যাতনের সাথে তুলনা করতে আসেন। পুরুষ নির্যাতিত হয় সেটি আলাদা ইস্যু। নারী নির্যাতনের সাথে এটির তুলনা হাস্যকর। নারীর হাতে প্রতিদিন কয়টা পুরুষ খুন, এসিড এর শিকার হয়?
কেউ কেউ আছে, স্বামীর লাত্থি খেয়ে ঘন্টাখানেক পরে আই লাভ ইউ শুনলে গলে যায়। সেদিন ইউটিউবে নারী হত্যার ঘটনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেখছিলাম যেখানে, মেয়েকে প্রেমিকা থাকা অবস্থায় মারধর করতো, তবুও সে তার প্রেমিককে ভালবাসতো ও বিয়েও করেছিল। এরপর বিয়ে হয়, যথারীতি এক সময় হত্যাও করে। এমন কাহিনী অনেক রয়েছে। মনে করে, বিয়ে করলে ঠিক হয়ে যাবে। এই করলে ঠিক হবে, ওই করলে ঠিক হবে, কিন্তু হিংস্রতা এত সহজে ঠিক হয়না। কারণ তারা পশু, হিংস্রতা তাদের অন্তরে। এগুলো মানুষ না। তাই এদের প্রতিহত করতে হবে।
হিংস্রতায় দেখাদেখি, অপেক্ষার সময় নেই। প্রথম দিনের সাধারণ হিংস্রতা থেকেই হত্যার মত ঘটনা ঘটে।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস। আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, নিজেরা নারীর প্রতি হিংস্র হবোনা, অন্য কাউকে হতে দেখলে রুখে দাঁড়াব।
Reference Internet